প্রবীর বিকাশ সরকার : আমার এক জাপানি সাংবাদিক বন্ধু আছেন তার নাম ইনোউয়ে কাযুহিকো। সংবাদপত্র, টিভি এবং ইউটিউবে ভীষণ তৎপর এবং খ্যাতিমান। তিনি ফোন করে বললেন, ‘তোমার রচিত (নিহোন গা আজিয়া অ মেজামে সাসেতা)’ অসাধারণ, ব্যতিক্রম এক গ্রন্থ। সুবারাশিই। প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই সংগ্রহ করেছি। বারবার পড়লেও আকিনাই। জাপানের সঙ্গে বেঙ্গলের এত দীর্ঘ ও গভীর সম্পর্কের কথা জানাই ছিল না। চোখ খুলে দিয়েছে তোমার বইটি আমাদের। দুঃসাহসী পাঁচজনই ‘বেঙ্গলি’ এটাও প্রথম জানলাম। অদোরইতা। তোমার সঙ্গে বসে বিস্তারিত আরও জানতে চাই। সময় দাও। জানি তুমি খুব ব্যস্ত মানুষ। বিশেষ করে, টোকিও ট্রায়ালখ্যাত বেঙ্গলি বিচারপতি রাধাবিনোদ পাল, যার কথা বইয়ের একটি অধ্যায়ে লিখেছ, তার সম্পর্কে জানার খুব আগ্রহ আমার। 

এমন অমিত তেজদীপ্ত ‘বেঙ্গলি’ আজকের বাংলাদেশের এক অজপাড়া গাঁয়ে জন্মগ্রহণ করে বড় হয়েছেন ভারতে আর বিশ্বকে তোলপাড় করে দিয়েছেন একাই, এটা এই যুগের মানুষ ভাবতেও পারবে না। অন্তত আমি পারছি না। সদ্য প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী আবে শিনজোও কেন ‘বেঙ্গল’ কে পছন্দ করতেন এবং বাংলাদেশের জন্য স্বনির্ভরতার দুয়ার খুলে দিয়েছেন তোমার বই পড়েই বুঝতে পারলাম। অথচ সাধারণ জাপানিরা জানেই না এর পেছনের ইতিহাস। জানা যে কত জরুরি তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। বিস্তারিত জানতে চাই, তোমার সাক্ষাৎকার দরকার। কবে বসব, বলো? নানা মঞ্চ থেকেই কথা বলতে চান এমন জাপানির সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু বেশি বিখ্যাত হওয়ার ইচ্ছে আমার নেই। বেশি বলতেও চাই না, কারণ আরও অনেক বিষয় রয়ে গেছে যার অনুসন্ধানে আমি ব্যস্ত। খুব সহসাই আমি প্রবাসী বাঙালি কমিউনিটি থেকে গুটিয়ে নেব। কিন্তু ইনোউয়েসানকে ফেরাতে পারব না। সামনেই বসব তার সঙ্গে। দীর্ঘ সময় নিয়ে অনেক ইতিহাস বলব তাকে, যা শুনে তার বিস্ময় আরও বেড়ে যাবে। পাঁচ বাঙালির মধ্যে শেষ বাঙালি বঙ্গবন্ধুকে নিয়েও বলবো, তার আদর্শ, চিন্তা ও রাজনৈতিক জীবন নিয়েও। ভুলভ্রান্তিও বাদ যাবে না। নিঃসন্দেহে তিনি অমিততেজ একজন বাঙালি ছিলেন, যার থেকে কেউ শিক্ষা গ্রহণ করেনি। এসব ইতিহাস আমি ছাড়া আর কেউ বলতে পারবে না, এটাই আপাতত সত্যি। লেখক: শিশুসাহিত্যিক ও গবেষক